ফাইনালে ওঠে পাকিস্তান অধিনায়ক নানা হম্বিতম্বি করলেও শেষ হাসিটা হেসেছে ভারতই। ফাইনালের শেষের দিকে কিছুটা সুযোগ সৃষ্টি করলেও শেষ ওভারের রোমাঞ্চকর মুহূর্তকেও নিজেদের করতে পারলো না পাকিস্তান।
৬ বলে ১০ রানের সমীকরণে হারিস রউফ কোনো মুন্সীয়ানাই দেখাতে পারেননি। উল্টো ভারতের ব্যাটারদের কাছে পুরোপুরি নাস্তানাবুদ হয়েছেন। ২ বল হাতে রেখেই ম্যাচ জিতেছে ভারত। যদিও জিততে ভারতকে শেষ ওভার পর্যন্ত খেলতে হয়েছে।
৪ দশক অপেক্ষার পর রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান এশিয়া কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়ে শেষ ওভারে থ্রিলও কিছুটা জমেছে। তবে আদতে শুরুর ধাক্কা সামলে নেবার পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ভারতের হাতেই ছিলো। সেই আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন হয়েছে শেষ ওভারেও।
পাকিস্তান এ যাত্রায়ও হারের বৃত্ত থেকে বেরোতো পারলো না। উল্টো হারিস রউফদের মতো অভিজ্ঞদের বাজে বোলিংয়ের কারণে বড় ব্যবধানে বিপর্যয় মেনে নিলো। পাকিস্তানকে লজ্জা দিয়ে ৫ উইকেটে জিতে এশিয়া কাপের শিরোপা ঘরে তুলল ভারত।
দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে রোববার সপ্তদশ এশিয়া কাপ ফাইনালে উড়ন্ত সূচনা পেয়েছিল পাকিস্তান। ১১.২ ওভারে ১০০ রান তুলেও তারা চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে অলআউট হয় ১৪৬ রানে। তিলক ভার্মার ফিফটিতে ভর করে ২ বল হাতে রেখেই ভারত জয় নিশ্চিত করেছে।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারতও শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা অভিষেক শর্মাকে (৫) দলীয় ৭ রানে ফেরান ফাহিম আশরাফ। স্লো ডেলিভারিতে মেরে খেলতে গিয়ে ধরা পড়েন হারিস রউফের হাতে।
পরের ওভারে শাহিন আফ্রিদির স্লো বলে তুলে মারার চেষ্টায় ঠিকঠাক লাগেনি সূর্যকুমার যাদবের (১) ব্যাটে। মিড অফে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন সালমান আগা। সূর্য ব্যাট হাতে ধুঁকছিলেন চলতি বছর, সেই অফফর্ম এবারের এশিয়া কাপেও চালু রেখেছেন।
ফাইনালসহ এই বছর ১১ ম্যাচে ভারতীয় অধিনায়কের রান মাত্র ১০০। নিজের দ্বিতীয় ওভারে ফাহিম ভারতীয় শিবিরে আবারও ধাক্কা দেন শুভমান গিলকে (১২) ফিরিয়ে। মিড অনে তার ক্যাটিও নেন রউফ। ৪ ওভারে ২০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ভারত বিপদে পড়ে। পাওয়ার প্লের ষষ্ঠ ওভারে ফাহিমকে চার-ছক্কায় ১১ রান নিয়ে সেই পরিস্থিতি কিছুটা কাটিয়ে ওঠেন তিলক ভার্মা।
আবরার আহমেদের করা নবম ওভারে ডিপ মিডে ক্যাচ তুলেছিলেন সঞ্জু স্যামসন। কিন্তু ব্যক্তিগত ১২ রানে থাকা এই ব্যাটারের একেবারে সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করে বসেন হুসাইন তালাত। সেটাই বিপদের তিরটা পাকিস্তানের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছে।
এরপর তিলক-স্যামসন মিলে গড়েম বোঝাপড়ার জুটি। রান নিয়ে প্রান্ত বদল করেছেন, সুযোগমতো হাঁকিয়েছেন বাউন্ডারি। ৫৭ রানে সেই জুটি ভেঙেছেন আবরার, ব্যক্তিগত ২৪ রানে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়েছেন স্যামসন।
ভারতের ওপর প্রয়োজনীয় রানরেটের চাপ বাড়ছিল। রউফের করা ১৫তম ওভারে ২ চার ও এক ছক্কায় ১৭ রান নিয়ে তা থেকে কিছুটা মুক্তি দিয়েছেন তিলক। ৪১ বলে ব্যক্তিগত ফিফটিও পেয়ে যান এই বাঁহাতি ব্যাটার। পরের ওভারে আবরার ১১ রান দিলে ৪ ওভারে ভারতের আর ৩৬ রান প্রয়োজন হয়।
শেষদিকে, রোমাঞ্চ ছড়ায় দুবের আউটে। তবে তিলকের সঙ্গে তার ৬০ রানের জুটি ভারতের কাজটা সহজ করে ফেলেছিল। শেষ ওভারে তাদের প্রয়োজন ছিল ১০ রানের। চার-ছক্কায় তিলক ২ বল হাতে রেখেই ভারতের জয় নিশ্চিত করেন।
সকাল নিউজ/এসএফ