রোগীকে অচেতন করে ভারতের নয়াদিল্লির একটি হাসপাতালে চলছিল অস্ত্রোপচার। চিকিৎসকরা তার পিত্তথলি অপসারণ করছিলেন। রোগীর কানে লাগানো হেডফোনে তখন মৃদু শব্দে বাজছিল বাঁশির সুর।
অস্ত্রোপচারের সময় রোগীকে সাধারণ চেতনানাশক দেওয়া হয়েছিল। এতে তার মস্তিষ্ক কিছুটা নিস্তেজ হলেও শ্রবণশক্তি সক্রিয় ছিল। চিকিৎসকরা বলছেন, অস্ত্রোপচারের সময় সংগীত না শোনা রোগীর তুলনায় সংগীত শোনা রোগীর জ্ঞান ফেরাতে কম মাত্রার ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়েছে।
অ্যানেসথেশিয়ার সময় সংগীত বাজালে রোগীর কম মাত্রার ওষুধের প্রয়োজন হয় এবং এটি জ্ঞান ফেরানোর কাজেও কিছুটা ভূমিকা রাখে বলে দিল্লির মাওলানা আজাদ মেডিকেল কলেজ ও লোক নায়ক হাসপাতালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে।
মাওলানা আজাদ মেডিকেল কলেজের গবেষক তানভি গোয়েল বলেন, ‘সাধারণ অ্যানেসথেশিয়া ও নির্দিষ্ট অংশ অবশ করার চল দীর্ঘদিনের। কিন্তু শরীর সহজে সার্জারির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে না। এ অবস্থায় গবেষকরা ওষুধের প্রয়োজনীয়তা কমানোর উপায় খুঁজতে চান।’
তিনি বলেন, ‘তারা প্রথমে ৫৬ প্রাপ্তবয়স্ক রোগীর ওপর ১১ মাস ধরে পরীক্ষা চালান। এসব রোগীকে দুটি দলে ভাগ করে একই মাত্রায় প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়। দুই দলের রোগীদের হেডফোন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অস্ত্রোপচারের সময় কেবল এক দলের রোগীদের কানে সংগীত বাজানো হয়।’
অ্যানেসথেশিয়া বিশেষজ্ঞ ও স্বীকৃত মিউজিক থেরাপিস্ট ফারাহ হুসাইন বলেন, অস্ত্রোপচারের সময় সংগীত বাজানোর ফলাফল ছিল চমকপ্রদ। সংগীত শোনানো রোগীদের জ্ঞান ফেরানোর প্রক্রিয়ায় প্রোপোফল ও ফেন্টানিলের মতো ওষুধের কম ব্যবহার করতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘জ্ঞান ফেরাটাও বেশ মসৃণ ছিল। তাদের স্ট্রেস হরমোন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় ছিল। জার্নালে গবেষকরা লিখেছেন, অ্যানেসথেশিয়ার সময় শ্রবণক্ষমতা অক্ষুণ্ন থাকে। তাই সংগীত মস্তিষ্কের অভ্যন্তরীণ অবস্থাকে প্রভাবিত করতে পারে।’ তথ্যসূত্র: বিবিসি।
সকাল নিউজ/এসএফ


