যদি সরকার জুলাই সনদ বাস্তবায়নে দেরি করে, তাহলে জনগণ স্বাভাবিকভাবেই রাস্তায় ফিরে আসবে মন্তব্য করে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি।’
তিনি বলেন, ‘এই সনদ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কার্যকর করা হোক এবং প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করা হোক। তবে তা অবশ্যই জাতীয় নির্বাচনের আগেই হতে হবে।’
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের ধারাবাহিক বৈঠক শেষে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
১৯৯০ সালের গণ-আন্দোলনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাস্তবায়নের দৃষ্টান্ত টেনে তিনি বলেন, ‘তৎকালীন সময়েও সরকার বাস্তবায়নে গড়িমসি করেছিল, ফলে আন্দোলনের মাধ্যমেই তা বাস্তবায়িত হয়েছিল।’
বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা রক্ষা প্রসঙ্গে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল হয়েছিল একটি বিতর্কিত রায়ের মাধ্যমে। বিচার বিভাগকে আবার বিতর্কে না জড়ানোই শ্রেয়।’
জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ জানান, ঐকমত্য কমিশন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য চারটি বিকল্প নিয়ে কাজ করেছে। এর মধ্যে ‘সংবিধানিক আদেশ’ ব্যবস্থাকেই সবচেয়ে শক্তিশালী ও বাস্তবায়নযোগ্য ভিত্তি হিসেবে সুপারিশ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সংসদের পক্ষে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তাই গণভোট ছাড়া এটি বাস্তবায়ন করা সংবিধান পরিপন্থী হতে পারে। ১৯৯১ সালের গণভোট ছিল নির্বাচন-পরবর্তী আনুষ্ঠানিকতা। কিন্তু এবার জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারণ, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে একটি বিপ্লবী সরকার এসেছে, যার ভিত্তি জনগণের অভিপ্রায়।
তরুণ সমাজের সমর্থনের উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনে জামায়াত-সমর্থিত প্রার্থীর বিজয় প্রমাণ করে, নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার পক্ষে দেশের যুবসমাজ দাঁড়িয়েছে।’
হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, ‘যদি গণভোট হয়, জনগণ অবশ্যই জুলাই সনদের পক্ষে রায় দেবে। আর যদি না দেয়, আমরা সে রায়ও মেনে নেবো। কারণ, জনগণের ইচ্ছাই দেশের সর্বোচ্চ আইন।’
সকাল নিউজ/এসএফ