রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলা থেকে তাকে আটক করা হয়।
আয়েশাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সহিদুল ওসমান মাসুম বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই গৃহকর্মী আয়েশা পলাতক ছিলেন। ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঝালকাঠি আয়েশার স্বামীর বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিএমপির মিডিয়া শাখা থেকে জানানো হয়েছে, তেজগাঁও বিভাগের ডিসির সরাসরি তত্ত্বাবধানে মোহাম্মদপুর থানার একটি টিম অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) লায়লা ফিরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) হত্যা করে পালিয়ে যান আয়েশা।
এদিকে, আয়েশা পুলিশের কাছে প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি পুলিশকে জানান, ঘটনার দিন তিনি বাসা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে গৃহপরিচারিকা লায়লা আফরোজ তাকে চুরির অভিযোগে আটক করেন এবং তল্লাশি করতে চান। এ সময় নিজের কাছে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তিনি লায়লা আফরোজকে আঘাত করেন। আফরোজার চিৎকার শুনে তার মেয়ে নাফিসা দৌড়ে এলে তাকেও একই অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকেন। ঘটনার এক পর্যায়ে তার হাতেও কোপ লাগে বলে দাবি করেন তিনি।
তবে আয়েশার এই বক্তব্যকে পুরোপুরি গ্রহণ করছে না পুলিশ। তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, তার দেওয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করা হবে, কারণ কিছু অংশ সন্দেহজনক ও অসম্পূর্ণ মনে হচ্ছে। পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডে অন্য কেউ জড়িত ছিল কি না, কিংবা পরিকল্পিত কোনো ঘটনাই কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জানা গেছে, আয়েশার স্বামী রাব্বীকেও আটক করা হয়েছে। স্বামীর দেওয়া তথ্যেই নলছিটি থেকে আয়েশাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আয়েশা ছয় মাস আগে মোহাম্মাদপুরের বেড়িবাঁধ এলাকার একটি বাসায় চুরি করেছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত সোমবার সকালে মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের একটি ১৪ তলা আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ ও তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। নাফিসা মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে গোটা দেশে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
সকাল নিউজ/এসএফ


