রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গৃহবধূ লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) হত্যার পর আত্মগোপনে ছিলেন গৃহকর্মী আয়েশা। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ঝালকাঠির নলছিটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। একইসাথে তার স্বামী রাব্বীকে আটক করে পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম আলোচিত এ হত্যামামলার শুনানি শেষে গৃহকর্মী আয়েশার ছয়দিন ও তার স্বামী রাব্বি শিকদারের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে, সকালে তাদেরকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক সহিদুল ওসমান মাসুম তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হারুনুর রশিদ ও কাইয়ুম হোসেন নয়ন শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত তাদের ওই রিমান্ডের আদেশ দেন। তবে আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের পর নিহত লায়লা ফিরোজের স্বামী আ জ ম আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে গত ৮ ডিসেম্বর মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ৫ ডিসেম্বর আসামি আয়েশা বাদী আজিজুল ইসলামের বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গত ৮ ডিসেম্বর সকাল ৭টার দিকে তিনি নিজ কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থল থেকে তিনি স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে তিনি নিরুপায় হয়ে বেলা ১১টার দিকে বাসায় ফেরত আসেন।
এসে দেখেন, তার স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমের চিহ্ন এবং সে মৃত অবস্থায় পড়ে আছে এবং তার মেয়ের গলার ডান দিকে কাটা, গুরুতর অবস্থায় মেইন গেটের দিকে পড়ে আছে। তখন মেয়ের ওই অবস্থা দেখে তাকে উদ্ধার করে পরিছন্নকর্মী মো. আশিকের মাধ্যমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, বাদী আজিজুল বাসার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখতে পান, আসামি গৃহকর্মী আয়েশা সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে কাজ করার জন্য বাসায় আসেন এবং সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় তার মেয়ের একটি মোবাইল, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে চলে যান। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে বাদী নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে সকাল ৭টা ৫১ থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় তার স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি অথবা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করা হয়েছে।
সকাল নিউজ/এসএফ


