গাজায় ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে সংঘাত চলছে। মার্কিন মধ্যস্থতায় সহিংসতার অবসানের জন্য ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে। চুক্তিতে স্বাক্ষর করা সত্ত্বেও ইসরায়েল রবিবার জোর দিয়ে বলেছে, তারা গাজার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ করবে, যেখানে একটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের কথা রয়েছে।
ইসরায়েল প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মন্ত্রীদের বলেন, ‘ইসরায়েল তার শত্রুদের ওপর কখন ও কোথায় হামলা চালাবে এবং কোন কোন দেশকে যুদ্ধবিরতি তদারকির জন্য সেনা পাঠাতে দেওয়া হবে, সেই সিদ্ধান্ত তারা নিজেরাই নেবে।’
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। আমরা আমাদের নিজস্ব উপায়ে নিজেদের রক্ষা করব এবং আমরা আমাদের ভাগ্য নিজেরাই নির্ধারণ করে যাব। এর জন্য আমরা কারো অনুমোদনের অপেক্ষা করি না। আমরাই আমাদের নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণ করি।’
এদিকে এএফপির ফুটেজে দেখা গেছে, মিশরীয় ত্রাণ কমিটি আল-জাওয়ায়েদার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া একটি মিশরীয় বহর গাজায় উদ্ধারকারী ও ভারী যন্ত্রপাতি নিয়ে যাচ্ছে। এই যন্ত্রপাতি হামাসের হাতে অপহৃত এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া ইসরায়েলি জিম্মিদের মৃতদেহ দ্রুত খুঁজে বের করতে সাহায্য করবে। মিশরীয় পতাকা লাগানো লো-লোডার ট্রাকগুলো বুলডোজার এবং খননকারী যন্ত্র নিয়ে গাজায় প্রবেশ করে। সেই সময় টিপার ট্রাকগুলো হর্ন বাজিয়ে এবং আলো জ্বালিয়ে চলছিল।
ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র শশ বেড্রোসিয়ান বলেন, নেতানিয়াহু ব্যক্তিগতভাবে মিশরীয় দলের আগমন অনুমোদন করেছেন। এটি এখন শুধুমাত্র একটি প্রযুক্তিগত দল এবং এই কর্মীদের কেউই সামরিক বাহিনীর নন। আমাদের জিম্মিদের সন্ধানের জন্য এই দলটিকে আইডিএফের ইয়েলো লাইনের অবস্থানের বাইরে গাজার ভূখণ্ডে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’
মার্কিন মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্তাবলী অনুসারে, হামাসের বিরুদ্ধে প্রায় দুই বছর ধরে চলা নৃশংস লড়াই শেষে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার করে নিলে, প্রধানত আরব বা মুসলিম দেশগুলো থেকে আসা একটি আন্তর্জাতিক বাহিনীর গাজার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা। কিন্তু ইসরায়েল তাদের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী তুরস্কের যেকোনো ভূমিকার বিরোধিতা করছে। এই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ায় নিজ জোটের কট্টরপন্থীদের সমালোচনার মুখে থাকা নেতানিয়াহু রবিবার জেরুজালেমে মন্ত্রিসভার বৈঠকে কঠোর অবস্থান নেন।
মার্কিন সেক্রেটারি অব স্টেট মার্কো রুবিও ওয়াশিংটনের কর্মকর্তাদের উচ্চ পর্যায়ের সফরের সমাপ্তি টানার একদিন পর নেতানিয়াহু বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাহিনীর বিষয়ে আমরা স্পষ্ট করে দিয়েছি, কোন বাহিনী আমাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য তা ইসরায়েলই নির্ধারণ করবে।’
পরে বেড্রোসিয়ান আরো স্পষ্ট করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এটি সহজভাবে হোক বা কঠিনভাবে হোক, গাজা উপত্যকার সামগ্রিক নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলের হাতেই থাকবে।
গাজাকে নিরস্ত্রীকরণ করা হবে এবং ফিলিস্তিনি জনগণকে শাসন করার ক্ষেত্রে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না।’
সকাল নিউজ/এসএফ


