সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘সংস্কারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা তাঁর সহযোগী ও আমলাতন্ত্র এগিয়ে নিতে পারেননি। ফলে যে আগ্রহ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অর্থনীতির শ্বেতপত্র প্রণয়ন, টাস্কফোর্স গঠনসহ বিভিন্ন সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিলেন তা আশানুরূপ গতি পায়নি।’
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে সিলেট মহানগরের একটি হোটেলের হলরুমে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের প্রাক্-নির্বাচনি আঞ্চলিক পরামর্শসভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘আগামী দিনের নির্বাচনি ইশতেহারে সেই প্রতিশ্রুতিগুলো স্থান দেওয়া প্রয়োজন, যার ধারাবাহিকতা নতুন সরকার রক্ষা করবে। নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে ও বাংলাদেশকে মধ্যমমেয়াদি আয়ের জায়গায় নিয়ে যেতে হলে এ সংস্কারগুলো অপরিহার্য। সংস্কারবিরোধী জোট যেটা সৃষ্টি হয়েছিল, সেটা ভাঙতে হলে এ ধরনের পদক্ষেপ নির্বাচনি ইশতেহারে অপরিহার্য।’
সবকিছু বর্তমান সরকার করে যেতে পারবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকারকে স্পষ্ট করতে হবে কতটুকু সংস্কার তারা করতে পেরেছে; বাকি মেয়াদে কতটা সম্পন্ন করতে পারবে। এবং এর আলোকে অসম্পূর্ণ কাজগুলো এগিয়ে যাওয়ার বিষয়েও ইশতেহারে স্পষ্ট নির্দেশনা থাকতে হবে।’ এর আগে প্রাক্-নির্বাচনি আঞ্চলিক পরামর্শসভার মুক্ত আলোচনা পর্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতিনিধিরা নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।
সভার শুরুতে মূল প্রবন্ধে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘অতীতে এ দেশে কেবল দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে। স্কুল-কলেজের কেবল ইমারত হয়েছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মান বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। দেশে একটি গোষ্ঠী গড়ে উঠেছিল যা দৃশ্যমান বিভিন্ন প্রকল্প নিতে সাহায্য করেছিল।’
দেশে ‘চামচা পুঁজিবাদী’ অর্থনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ পুঁজিবাদে কিছু চামচা তৈরি হয়। এ চামচারা দেশ লুটপাটতন্ত্র ও চোরতন্ত্রতে পরিণত করেছে। রাষ্ট্রের পুরো কাঠামো তারা এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছে। তারা সব সময়ই সংস্কারবিরোধী।’
তিনি বলেন, ‘সংস্কার প্রণয়ন করা যত সহজ, বাস্তবায়ন করা তত সহজ নয়। আগামী দিনে যারা দেশ পরিচালনা করবেন তাদের এ ব্যাপারে আগ্রহী হতে হবে। এখনকার সরকার অন্তর্বর্তী, কিন্তু সময়টা রূপান্তরকালীন। এ রূপান্তরের পথে আমাদের এগোতে হবে।’
সভায় অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘অতীতের রাজনৈতিক দলগুলো অনেক আশ্বাস দিয়েছিল, কিন্তু আমরা তার বাস্তবায়ন পাইনি। তবে আমাদের পরিবর্তনের আশা আছে। আমাদের ভবিষ্যৎ অতীতের মতো হবে না। গত বছরের জুলাইয়ে আমরা একটা বড় পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এসেছি।
সকাল নিউজ/এসএফ

