লালমনিরহাটে ধান কাটার মৌসুম শেষে খড়ের বাজারে ব্যাপক উত্থান ঘটেছে। প্রতি আঁটি খড় এখন বিক্রি হচ্ছে ৮ টাকায়, যা কয়েক সপ্তাহ আগেও ছিল মাত্র ৩ থেকে ৪ টাকা। এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে কৃষকরা লাভবান হলেও গবাদিপশু খামারিরা পড়েছেন বড় ধরনের বিপাকে।
মৌসুম শেষে ধান ঘরে তোলার পর অবশিষ্ট খড় সংরক্ষণ করে বিক্রি করছেন কৃষকরা। এতে অতিরিক্ত আয় করে খুশি তারা। তবে খামারিরা বলছেন এ দামে খড় কিনে গরুর খাবার জোগানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বর্তমানে ১ হাজার আঁটি খড় বিক্রি হচ্ছে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকায়। খামারিদের আশঙ্কা, দাম যদি এভাবে বাড়তে থাকে, কয়েক দিনের মধ্যেই তা প্রতি আঁটি ৯-১০ টাকায় পৌঁছাবে।
হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা পাড়ের কৃষক আব্দুল ইসলাম বলেন,এখন আর আগের মতো খড় পাওয়া যায় না। যন্ত্রে ধান মাড়াইয়ের সময় খড় অনেকটাই নষ্ট হয়। বন্যার পানি পড়ে যা থাকে তাও পচে যায়। ফলে সংকট তৈরি হচ্ছে।
কালীগঞ্জের মনছুর আলী বলেন,আগে ২-৩ টাকায় খড় কিনতাম, এখন ৮ টাকায়ও পাওয়া কঠিন। দুই-তিনটা গরু সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অন্যদিকে বাউরা ইউনিয়নের কৃষক এরশাদ আলম বলেন, তিনি তিন বিঘা জমি থেকে প্রায় ৩৬শ আঁটি খড় সংগ্রহ করেছেন। তিনি বলেন, “প্রতি আঁটি ৭ টাকায় বিক্রি করেছি। খড় বিক্রি করেই ভালো আয় হয়েছে। ধানের পাশাপাশি খড়ও এখন লাভজনক পণ্য।
হাতীবান্ধা উপজেলার খড় ব্যবসায়ী এমদাদ বলেন, গ্রামের কৃষকদের কাছ থেকে খড় কিনে বাজারে বিক্রি করি। আগের তুলনায় এখন দামে অনেক পার্থক্য। খড়ের ব্যবসা এখন বেশ লাভজনক হয়ে উঠেছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন,ধানের খড় গরুর প্রধান খাদ্য উপাদান। দাম বেড়ে যাওয়ায় খামারিদের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে উন্নত ঘাস চাষ, সাইলেজ সংরক্ষণ এবং খড় ব্যবস্থাপনায় সচেতন হলে এই সংকট মোকাবিলা সম্ভব।এতে তারা দীর্ঘমেয়াদে স্বাবলম্বী হয়ে দুধ ও মাংস উৎপাদন বাড়াতে সক্ষম হবেন।


