আরও বেড়ছে চট্টগ্রাম ইপিজেডের পোশাক কারখানায় লাগা আগুনের তীব্রতা। আগুন লাগার চার ঘণ্টা পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ফলে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। একইসাথে আশপাশের ভবনেও আগুন ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, কারখানাটিতে প্রচুর পরিমাণে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি কাজ করছে নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং সিইপিজেডের সেনাবাহিনীর টিম।
বৃহস্পতিবার সিইপিজেডের ১ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর সড়কের ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড’ কারখানায় বিকেল ২টা থেকে ৬টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালক জসিম উদ্দিন জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা চেষ্টা করেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বরং আগুন এখন একেবারে নিচতলা পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে। আগুনের তীব্রতা ক্রমশঃ বাড়ছে। আমরা যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছাই, ততক্ষণে আগুন ষষ্ঠতলা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের টিম পঞ্চম তলা পর্যন্ত গিয়ে আর ওপরে ওঠার স্পেস পায়নি। আমরা অন্তত ২৫ জন শ্রমিককে নিরাপদে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। এরপর ভবনের চারপাশ ঘিরে পানি ছিটালেও আগুন কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। বিশেষ করে ভবনের উত্তরদিক থেকে ক্রমশঃ আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। আগুনের তীব্রতা এত বেশি যে আমাদের কাছে যেতে বেগ পেতে হচ্ছে।
চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশের বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানিয়েছেন, কারখানায় প্রায় ৮০০ জন শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন। আগুন লাগার পর দ্রুততার সঙ্গে প্রায় সকলেই বেরিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। এখনো পর্যন্ত কেউ ভেতরে আটকে থাকার কিংবা প্রাণহানির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ১০ মিনিটের দিকে সিইপিজেডের ওই কারখানায় আগুন লাগার সংবাদ পৌঁছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে। আটতলা ভবনটির অষ্টম তলায় প্রথমে আগুনের সূত্রপাত হয়। এরপর সেই আগুন সপ্তম ও ষষ্ঠ তলায় ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সিইপিজেড, বন্দর, কেইপিজেড, আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশন থেকে প্রথমে ৮টি ইউনিটের কর্মীরা সেখানে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। আধাঘণ্টার মধ্যে আরও ৮টি ইউনিট কাজে যোগ দেয়।
সর্বশেষ সন্ধ্যা ৬টার দিকে একটি ইউনিটসহ মোট ১৭টি ইউনিট এখন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শুরু থেকেই সিইপিজেডে সেনাবাহিনীর একটি নিয়মিত টিম ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নৌবাহিনীর ৫টি ইউনিট এবং পরবর্তীতে বিমানবাহিনীর একটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দিয়েছে। এছাড়া দুর্ঘটনা এড়াতে আগুন কবলিত ভবনটির চারপাশ ঘিরে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশের সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। অহেতুক লোকজন যাতে ভিড় করতে না পারে, সেই চেষ্টা করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
সকাল নিউজ/এসএফ


