পাহাড়ি শিক্ষার্থীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার জেরে টানা কয়েক দিনের অবরোধ, মিছিল ও সমাবেশের পর খাগড়াছড়িতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে খগড়াছড়ি জেলা সদর ও পৌরসভা এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে জানমালের নিরাপত্তায় খাগড়াছড়ি পৌর শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন রয়েছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। সকাল থেকে শহরে যান চলাচল বন্ধ, অধিকাংশ দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে। শহরের বিভিন্ন মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টহল দিচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে সাত প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
সকাল থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে জিজ্ঞাসাবাদ করছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। তবে সকাল থেকে জেলার কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এর আগে, শনিবার রাতে সাজেকে আটকে পড়া ২ হাজারের বেশি পর্যটককে সেনা নিরাপত্তায় গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়।
এর আগে, শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদ এলাকা, মহাজনপাড়া, নারিকেলবাগান, চেঙ্গী স্কোয়ার ও শহীদ কাদের সড়কে দুটি পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সংঘর্ষ চলাকালে স্বনির্ভর ও নারিকেলবাগান এলাকায় কয়েকটি দোকানে হামলা হয়।
পরিস্থিতি অবনতির কারণে দুপুর থেকে খাগড়াছড়ি পৌরসভা, সদর উপজেলা ও গুইমারা উপজেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি বলবৎ রয়েছে। মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ৭ প্লাটুন বিজিবি।
সহিংসতায় অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত একজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হয়েছে। রাতে খাগড়াছড়ির একটি বৌদ্ধবিহারে নাশকতার প্রস্তুতিকালে ৩ যুবককে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
খাগড়াছড়ি জেলা সিভিল সার্জন মো. ছাবের বলেন, ‘দুই পক্ষের উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে মোট ২৩ জন আহত হয়। এদের মধ্যে ২১ জন প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেছে। দুজন খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল সন্ধ্যায় বলেন, ‘শনিবার দুপুরের পর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পরে ইট-পাটকেল ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ সার্বিক নিরাপত্তায় যৌথভাবে কাজ করছে। পরে সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে উত্তেজিত দুপক্ষকে আমরা সরিয়ে দেই। নতুন করে যাতে সহিংসতার ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় সাত প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। বিজিবি খাগড়াছড়ি ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক মো. হাসনুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সকাল নিউজ/এসএফ