রংপুর প্রেসক্লাবে প্রশাসকের মাধ্যমে নতুন সদস্যভূক্তি নিয়ে রংপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আদেশ স্থগিত করেছে উচ্চ আদালত।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে নগরীর সেন্ট্রাল কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মামলার আইনজীবীরা। এ সময় রংপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মোনাব্বর হোসেন মনা, সাধারণ সম্পাদক মেরিনা লাভলী, সিটি প্রেসক্লাবের সভাপতি স্বপন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মানিকসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রেসক্লাব মামলার আইনজীবী মোকছেদ বাহালুল বলেন, ‘পূর্বের কমিটির (সভাপতি মাহবুব রহমান ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন) বহিস্কৃত সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা অবস্থায় বড় অংকের টাকা দুর্নীতি করেছে। এটার বিরুদ্ধে বর্তমান কমিটির করা মামলায় তারা প্রশাসনযন্ত্রকে ব্যবহার করে টোটাল সিস্টেমকে উল্টে দেয়ার অপচেষ্টার অংশ হিসেবে প্রেসক্লাবে প্রশাসক নিয়োগ, সদস্যভূক্তিসহ নানা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তবে এরই মধ্যে উচ্চ আদালতের এ আদেশের মাধ্যমে আমাদের প্রাথমিক বিজয় এসেছে।’
অপর আইনজীবী মাহে আলম বলেন, ‘তর্কিত প্রশাসকের মাধ্যমে প্রেসক্লাবে সদস্যভূক্তি নিয়ে রংপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত মামলার শুনানি না হওয়া পর্যন্ত উভয়পক্ষকে স্থিতি অবস্থায় থাকার আদেশ দিয়েছিল। কিন্তু তর্কিত প্রশাসক আদালতের আদেশকে তোয়াক্কা না করে প্রেসক্লাবে ১০৫ জন নতুন সদস্য নিয়েছে। সাবেক ডিসি রবিউল ফয়সাল সেই বিজ্ঞপ্তি তার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। এ নিয়ে আদালতে ভায়োলেশন মামলা চলমান রয়েছে। তর্কিত প্রশাসক তাদের জমা দেয়া প্রশ্নবিদ্ধ গঠনতন্ত্রের নিয়ম উপেক্ষা করে সদস্য নিয়েছে। আদালতে এত তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করার পরেও রংপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রেসক্লাব নিয়ে যে রায় দিয়েছে, আমরা মনে করি তা ম্যানুপুলেট করা হয়েছে। রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভের মধ্যে গণমাধ্যম একটি। রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হচ্ছে ডিসি। এখন রাষ্ট্রের প্রতিনিধি যদি গণমাধ্যমের গলাচেপে ধরে, তাহলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা থাকলো না। প্রশাসনের থাবার নিচে থেকে সাংবাদিকতা হতে পারে না।’
প্রেসক্লাব মামলার আইনজীবী জোবাইদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রেসক্লাবে তর্কিত প্রশাসকের সদস্যভুক্তি নিয়ে উচ্চ আদালত আদেশের পরিস্কারভাবে বলা হয়েছে যে, সদস্য নেয়ার ব্যাপারে পূর্বে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত নিম্ন আদালতের যে নিষেধাজ্ঞা বাতিল করেছিল, সেই আদেশ স্থগিত করেছে উচ্চ আদালত। এর মাধ্যমে প্রেসক্লাবে সদস্যভুক্তির কোন সুযোগ নেই। প্রশাসকের মাধ্যমে কমিটি করারও কোন সুযোগ নেই। সেই সাথে প্রেসক্লাব তাদের বসানোরও কোন সুযোগ নেই।’
এ বিষয়ে রংপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মেরিনা লাভলী বলেন, ‘আমার আমলেই প্রেসক্লাবে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সর্বোচ্চ সংখ্যক সাংবাদিককে সদস্য করা হয়েছে। বিচারিক কার্যক্রম শেষে আগামীতেও গঠনতন্ত্র মেনে সকল পেশাদার সাংবাদিকদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হবে। ঐতিহ্যবাহী রংপুর প্রেসক্লাব নিয়ে প্রশাসনকে ব্যবহার করে কোন দুর্নীতিবাজরা ষড়যন্ত্র করবে তা সাংবাদিকসহ সচেতনরা মেনে নেবে না।’
সকাল নিউজ/এসএফ

