লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার মির্জারকোট হাজী মহিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও পরিবেশ ফেরাতে আন্দোলনে নেমেছে বিদ্যাল্যয়ের শিক্ষার্থীরাই।
রোববার (০৭ সেপ্টেম্বর) সকালে সাড়ে ১০ টায় শিক্ষার মানোন্নয়ন ও যথাযথ পরিবেশ ফিরিয়ে আনাসহ ২১ দফা দাবী বাস্তবায়নের দাবীতে সকল ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়ের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী নিজেদের ক্লাসে না গিয়ে মাঠে অবস্থান নেয়। এ সময় ২১ দফা দাবী বাস্তবায়নের উল্লেখ করা ব্যানার হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বিষয়ভিত্তিক নির্ধারিত শিক্ষক নাই। এজন্য শ্রেণিকক্ষে নিয়মিত পাঠদান করা হয় না। বছরের ৮ মাস পার হলেও অধিকাংশ বই পড়া হয়নি। এ বিদ্যালয় একদম নিম্নস্তরে চলে গেছে। পড়ালেখার পরিবেশ নেই। ফলে শিক্ষার্থীরা মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বার বার প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এজন্য প্রধান শিক্ষক দায়ী বলে মনে বরছেন শিক্ষার্থীরা।
তাদের দেওয়া ২১ দফা দাবীর মধ্যে রয়েছে- বিদ্যালয়ে পুণরায় বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া, শিক্ষার মানোন্নয়নে পদেক্ষেপ গ্রহণ, সঠিক সময়ে শিক্ষার্থীদেরকে বই প্রদান, স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার ও পানির ব্যবস্থা করা, বিদ্যালয় মাঠ ও শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, বিদ্যালয় পরিচালানায় দক্ষ পরিচালনা কমিটি গঠন, নিয়মানুযায়ী প্রত্যেক ক্লাস সময়মত করা, প্রতিবছর অভিভাবক সমাবেশ করা, কম্পিউটার শিক্ষার ব্যবস্থা করা, শ্রেণিপাঠের সময় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা, প্রাচীর (বাউন্ডারী) ও প্রধান ফটক নির্মাণ, প্রতিমাসে ক্লাস পরীক্ষা, অর্ধবার্ষিক ও বার্ষিক পরীক্ষা যথানিয়মে নিয়ে ফলাফল প্রকাশ করা প্রভৃতি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘বিদ্যালয়ে বহুদিন ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। কেনো নেই, বিদ্যালয়ের ফান্ডের টাকা কোথায়? কেনো বিদ্যুৎ বিল দেওয়া হয়নি। আমরা শুনেছি রিজার্ভ ফান্ডের ৬ লাখ টাকা নাকি নাই। এ টাকা গেল কোথায়। আমরা জবাব চাই।’
বিদ্যালয়ের ইংরেজী শিক্ষক একাব্বর আলী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কিছু দাবি খুব প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ দাবি। শিক্ষার মানোন্নয়ন ফিরিয়ে আনা দরকার, এটি উপলব্দি করেছি।’
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশাররফ হোসেনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।
পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও মির্জারকোট হাজী মহিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি উত্তম কুমার দাশ বলেন, ‘ক্লাস বর্জনের ঘটনা জেনে আমি বিদ্যালয়ে গিয়েছি। শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি। দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে আগামী তিনদিনের মধ্যে সব সমস্যার সমাধান করতে প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দিয়েছি।’
সকাল নিউজ/এসএফ