লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিয়োগ বাতিলের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে হরিজন (সুইপার) সম্প্রদায়।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) দিনভর লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ ও জেলা হরিজন অধিকার আদায় সংগঠনের ব্যানারে শতাধিক হরিজন কর্মবিরতি ঘোষণা করে।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া হরিজনরা জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক সংস্থাপন শাখায় ৭টি পদের অনুকূলে ৩৯জনকে নিয়োগের জন্য গত ১৩ এপ্রিল বিজ্ঞাপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত শুক্রবার নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বিজ্ঞাপ্তিতে ৬জন পরিচ্ছন্নকর্মী শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয়, কোন স্বীকৃত শিক্ষা বোর্ড হতে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
হরিজনরা অভিযোগ করে বলেন, ‘লালমনিরহাট ডিসি অফিসে ওই ৩৯জন স্টাফ নিয়োগে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক তাদের সঙ্গে বৈষম্য করেছেন। ইচ্ছাকৃতভাবে প্রশ্নপত্র কঠিন করে কৌশলে তাদের বাতিলের চেষ্টা করা হয়েছে। তারা ওই নিয়োগ বাতিলের দাবিতে শনিবার মানবন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।’
রোববারও দ্বিতীয় দিনের মত আন্দোলন অব্যাহত রাখে। তবে রোববার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের গেটে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে বিকেলে জেলা প্রশাসক এএইচএম রকিব হায়দার নিচে নেমে এসে তাদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের দাবিসমূহ লিখিতভাবে পেশ করার আহবান জানান। যা ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেন।
অপর দিকে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত হরিজনরা কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেন। এ আন্দোলন সারাদেশ ব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার হুমকী দেয়া হয়। ইতোমধ্যে লালমনিরহাট পৌরসভার পরিচ্ছনতার কাজে কর্মবিরতি পালন শুরু করেছেন কর্মরত হরিজনরা।
হরিজন ঐক্য পরিষদ এর রংপুর জেলার সভাপতি সুরেশ বাসফোর বলেন, ‘সরকারি খাতায় সুইপারদের চাকুরি করে স্যুটপড়া ভদ্রলোক। তিনি বেতন তুলে আলিসানে চলেন। আর তার কাজ করতে হয় জাত সুইপারদের। কাজ যদি আমাদেরকে করতে হয় তবে নিয়োগটাও আমাদের জাত সুইপারদের দিতে হবে। এ নিয়োগ বাতিল না করলে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে।’
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এএইচএম রকিব হায়দার বলেন, ‘যথাযথ নিয়মনীতি মেনে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছেন নিয়োগ বোর্ড। হরিজনদের বলেছি, তাদের দাবিসমূহ লিখিকভাবে দিলে আমরা নিয়োগ বোর্ডসহ কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠাব।’
সকাল নিউজ/এসএফ



