ভুয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে করদাতাদের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে ফিলিপাইনে। সরকারি কর্মকর্তা ও সংসদ সদস্যরা বিপুল অঙ্কের ঘুষ নিয়েছেন- উঠেছে এমন অভিযোগও। এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত না হওয়ায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ফিলিপাইন।
রবিবার রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসে উঠে ফিলিপাইন। ছাত্র, চার্চ সংগঠন, সেলিব্রিটি এবং নানা রাজনৈতিক দলের সাধারণ নাগরিকরা ম্যানিলা ও অন্যান্য শহরে একত্রিত হন। রবিবার সকালে ম্যানিলার এক পার্কে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ জড়ো হন। পরে রাজধানীর বিখ্যাত এডিএসএ সড়কেও হাজার হাজার মানুষ যোগ দেন।
বিক্ষোভে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের পর ২০০ জনের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। রবিবার আয়ালা ব্রিজ ও মেনদিওলা এলাকায় বিক্ষোভ চলাকালে এমন সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
আজ সোমবার সকালে দেওয়া এক বিবৃতিতে আঞ্চলিক পুলিশ জানায়, দিনের বেশিরভাগ সমাবেশ শান্তিপূর্ণ হলেও এই দুটি এলাকায় সহিংস রূপ নেয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রতিবাদকারীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। তারা মোটরসাইকেলও পুড়িয়ে দেয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে।’
পুলিশ জানিয়েছে, সহিংসতার ঘটনায় মোট ২২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে কয়েকজন অপ্রাপ্তবয়স্ক। সংঘর্ষে অন্তত ১৩১ জন পুলিশ আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে কিছুজনের অবস্থা গুরুতর হলেও সবাই চিকিৎসাধীন।
আল জাজিরার সাংবাদিক বার্নাবি লো ম্যানিলা থেকে জানিয়েছেন, সোমবার সকালে শহরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরলেও পুলিশের উপস্থিতি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। তিনি বলেন, ‘স্কুল বন্ধ রয়েছে, কারফিউ জারি করা হয়েছে, বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে দুর্নীতি সংক্রান্ত তদন্ত চলমান থাকায় আরো বিক্ষোভ হতে পারে।’
পরিবেশবাদী সংস্থা গ্রিনপিসের দাবি, জলবায়ু-সম্পর্কিত প্রকল্প থেকে শুধু ২০২৩ সালেই ১৩ বিলিয়ন পাউন্ডের বেশি অর্থ সরিয়ে নেয়া হয়েছে। অভিযোগগুলো প্রথম সামনে আসে জুলাই মাসে, যখন মৌসুমি বৃষ্টি ও ঝড় পুরো দেশকে প্লাবিত করে লাখো মানুষকে দুর্ভোগে ফেলে। ফিলিপাইন প্রতি বছর প্রায় ২০টি ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা দেশটিকে বিশ্বের অন্যতম বিপন্ন রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
সরকারি হিসাবে, দুর্নীতিতে গত দুই বছরে দেশটির অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১.৪৮ বিলিয়ন পাউন্ড সমপরিমাণ অর্থের। তথ্যসূত্র: গার্ডিয়ান
সকাল নিউজ/এসএফ
সকাল নিউজ/এসএফ