দেশবরেণ্য প্রয়াত সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোরকে মৃত্যুর পাঁচ বছর পর আয়কর পরিশোধের চিঠি পাঠিয়েছে কর অঞ্চল–১২। সহকারী কর কমিশনার কাজী রেহমান সাজিদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে, এন্ড্রু কিশোরের ৭২ হাজার ৮০৩ টাকা কর বকেয়া আছে।
কর অঞ্চল–১২ থেকে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০০৫–০৬ অর্থবছরে ২২ হাজার ৪২৩ টাকা এবং ২০১২–১৩ অর্থবছরে এন্ড্রু কিশোরের কাছে তাদের পাওনা ৫০ হাজার ৩৮০ টাকা।
এ বিষয়ে সহকারী কর কমিশনার কাজী রেহমান সাজিদ বলেন, ‘আসলে এটা আমাদের নিয়মিত কাজ। এন্ড্রু কিশোরের কাছে পাওনার দায়ভার তার উত্তরাধিকার যারা আছেন, তাদের ওপর বর্তাবে। এন্ড্রু কিশোরের উত্তরাধিকারদের কেউ আমাদের লিখিতভাবে জানাননি, তার বকেয়া কে বা কারা পরিশোধ করবেন। আমাদের অফিশিয়াল রেকর্ডেও তিনি যে মৃত তা নেই। তাই এটা এখনো বকেয়া হিসেবে আছে, সে জন্যই এই চিঠি পাঠানো।’
ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘ ১০ মাস যুদ্ধ করে ২০২০ সালের জুলাইয়ে মারা যান এন্ড্রু কিশোর। বাংলা গানের এই নন্দিত কণ্ঠশিল্পী ‘প্লেব্যাক সম্রাট’ নামে পরিচিত। বাংলাদেশের আধুনিক ও চলচ্চিত্রজগতের কালজয়ী অনেক গান তার কণ্ঠে সমৃদ্ধ হয়েছে। সুখ-দুঃখ, হাসি-আনন্দ, প্রেম-বিরহ-সব অনুভূতির গানই তিনি গেয়েছেন।
এন্ড্রু কিশোর ১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর তিনি রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন। সেখানেই তিনি বেড়ে উঠেছেন। পড়াশোনা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রাথমিকভাবে তিনি আবদুল আজিজ বাচ্চুর অধীনে সংগীতের পাঠ শুরু করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের পর নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, আধুনিক, লোকসংগীত, দেশাত্মবোধকসহ প্রায় সব ধারার গানে কণ্ঠ দেন রাজশাহী বেতারে তালিকাভুক্ত সংগীতশিল্পী হিসেবে।
চলচ্চিত্রে এন্ড্রু কিশোর গান গাওয়া শুরু করেন ১৯৭৭ সালে। দীর্ঘদিন পুরোদস্তুর পেশাদার কণ্ঠশিল্পী হিসেবে দুই বাংলায় গান করেছেন তিনি। একের পর এক জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অসুস্থ হয়ে পড়ার আগপর্যন্ত এন্ড্রু কিশোর প্লেব্যাক ও স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেছেন।
এন্ড্রু কিশোরের এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ে মিনিম এন্ড্রু সংজ্ঞা সিডনিতে গ্রাফিক ডিজাইন ও ছেলে জে এন্ড্রু সপ্তক মেলবোর্নে ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে পড়াশোনা করেছেন।
সকাল নিউজ/এসএফ