সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় নিরব বিপ্লব ঘটতে যাচ্ছে , এটি এই সরকারের অন্যতম সংস্কার বলে মন্তব্য করে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, আগে মাফিয়াচক্র ক্রমাগতভাবে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ পেত। সেটি এখন বন্ধ করা হচ্ছে। কেননা সরকারি ক্রয় আইন সংশোধন করে ১০ শতাংশ দরের বেশি বা কম রাখার বিধান বাদ দেওয়া হয়েছে। বিধিমালা আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষে গেজেট হলেই না বাস্তবায়ন শুরু হবে।
বুধবার একনেক বৈঠক শেষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সন্মেলন কক্ষে ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা বলেন, এখন কেউ প্রকল্প পরিচালক হতে চান না। সাধারণত প্রকল্প পরিচালিত হলে লাভ হয়। কিন্তু এখন উল্টো হয়েছে। কারণ আমরা এমন ব্যবস্থা নিয়েছি যাতে দুর্নীতি কমে যাবে। এটা এক দিক দিয়ে ভালো লক্ষণ।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, এখন নতুন ঠিকাদারেরা কাজ করার সুযোগ পাবেন। এজন্য যে কোনো দরপত্রে ৩০ শতাংশ কাজ নতুন ঠিকাদারদের দিতে হবে। এছাড়া দরপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আসবে। কেননা শুধু অভিজ্ঞতা থাকলেই কাজ পেতে অগ্রাধিকার পাবে না। বরং তার আগের কাজের রেকর্ড যাচাই-বাছাই করা হবে। বিশেষ করে ওই অন্য ব্যবসা-বাণিজ্যের তথ্যও নেওয়া হবে। কোন অনিয়ম-দুর্নীতি বা ঋণ খেলাপি আছে কিনা তারপরই কাজ দেওয়া হবে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা জানান, প্রকল্প বাস্তবায়নে ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতা দূর করা এবং কৃষি জমি রক্ষায় খাস জমি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশের খাস জমি চিহ্নিত করার জন্য কয়েকজন উপদেষ্টাকে দিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা রেল, পানিসম্পদ, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের খাস জমি চিহ্নিত ও বর্তমান অবস্থা তুলে ধরবে। আগামী ২ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবে।
তিনি আরও জানান, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের পাট ও তুলার সংমিশ্রণে বিশেষ সুতা তৈরি করে ডেনিম তৈরির একটি প্রকল্প বন্ধ করা হয়েছে। কেননা এটি ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা ছিল। এটির ব্যয় ৫০০ কোটি টাকার বেশি ধরা হয়েছিল। কিন্তু এত বছরে শুধু ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। সেটিও অনুমোদন ছাড়াই। এখন প্রকল্পটি বন্ধ করে দিলেও সরকারকে জমি অধিগ্রহণের টাকা দিতে হচ্ছে। আমরা তদন্ত করে দেখব, কেন জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
সকাল নিউজ/এসএফ