জুলাই সনদের ভিত্তিতেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে বলে সরকারকে হুঁশিয়ার করে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘এখনই জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্রের আইনি ভিত্তি দেওয়ার উপযুক্ত সময়।’
তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা আপনি সবাইকে ডাকুন, সাংবিধানিক আদেশ অথবা গণভোটের মাধ্যমে সনদকে আইনি ভিত্তি দিয়ে নির্বাচন করুন। দুই তিন মাস আলোচনার পর, একটি দল (বিএনপি) যা বলে, তাই যদি হয়, তাহলে কেন এত পরিশ্রম করালেন?’
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে আয়োজিত সমাবেশে গোলাম পরওয়ার এসব কথা বলেন। জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন, পিআর পদ্ধতি নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সমাবেশ করে জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা।
নির্বাচনের পর ভোটে রাজি হলেও, বিএনপি সংবিধান আদেশ জারির মাধ্যমে সংসদের বাইরে সংবিধানে পরিবর্তনের বিপক্ষে। দলটির অবস্থান হল, আগামী সংসদে সংবিধান সংশোধন করে সাংবিধানিক সংস্কার কার্যকর করা হবে। এরপর হবে গণভোট। জামায়াত নির্বাচনের আগে সাংবিধানিক সংস্কার কার্যকর এবং গণভোট চায়।
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে গোলাম পরওয়ার বলেন, কেউ কেউ বলন, ‘এটা করা যাবে না, ওটা করা যাবে না’। কিন্তু বিদ্যমান কাঠামোতে যদি আবার নির্বাচন হয়, তাহলে আরেকটি ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে। আরেকটি হাসিনার জন্ম হবে।
গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আপনারা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে পারছেন না। তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কীভাবে? তাই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিন। সাংবিধানিক আদেশ জারি করুন। গণভোট দিন। ফ্যাসিবাদের কার্যক্রম স্থগিত করুন।’
আলোচনা চলাকালে জুলাই সনদের বাস্তবায়নে জন্য আন্দোলনকে স্ববিরোধীতা বলে আখ্যা দিয়েছে বিএনপি। এর জবাবে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আন্দোলন রাজনীতির অংশ। রাজনীতি জনগণের আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরার জন্য। আমরাও আলোচনায় নিষ্পত্তির জন্য আশাবাদী, নিরাশ নই। সংসদে উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়েছে জুলাই সনদে। জামায়াত উভয়কক্ষে পিআর চায়। বিএনপি কোনো কক্ষেই পিআর চায় না।’
তিনি অরো বলেন, ‘পিআর মানতে হবে। ৭০ ভাগ মানুষ পিআরের পক্ষে। ঐকমত্য কমিশনে ৩১ দলের মধ্যে ২৫টি দল পিআরের পক্ষে রয়েছে। পিআর প্রশ্নে গণভোট দিন। গণভোটে জনগণের রায় যদি পিআরের বিপক্ষে যায় তাহলে মেনে নেব। কিন্তু তারা তো গণভোটকে ভয় পাচ্ছে।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও ড. এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ বক্তৃতা করেন। সমাবেশের পর বিক্ষোভ জিপিও মোড়, পল্টন মোড় ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে মৎস্য ভবন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
সকাল নিউজ/এসএফ