শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসকে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক দুঃখজনক ও কলঙ্কময় দিন উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ে সম্মুখসারির যোদ্ধা।’
আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ উপলক্ষে গতকাল দেয়া এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীরা তাদের মেধা ও প্রজ্ঞার প্রয়োগ, সাংস্কৃতিক চর্চা ও ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। যুদ্ধকালীন সরকারকে বুদ্ধিবৃত্তিক ও কৌশলগত পরামর্শ দিয়ে জাতিকে বিজয়ের পথে এগিয়ে নিতেও তাদের ছিল অসামান্য ভূমিকা।’
তিনি বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিনগুলোয় পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে দেশের বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে। শোকাবহ এ দিনে আমি শহীদ বুদ্ধিজীবীসহ মুক্তিযুদ্ধের সব বীর শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই এবং তাদের বিদেহী আত্মার শান্তি ও মাগফিরাত কামনা করি।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘বাঙালি জাতির বিজয়ের প্রাক্কালে হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা এসব দেশপ্রেমিক শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, প্রকৌশলী, দার্শনিক, রাজনৈতিক ও চিন্তাবিদসহ দেশের মেধাবী সন্তানদের নির্মমভাবে গুম ও হত্যা করে। এ পরিকল্পিত নৃশংস হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে থাকা বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করে একটি ব্যর্থ জাতিতে পরিণত করাই ছিল স্বাধীনতাবিরোধীদের মূল উদ্দেশ্য।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের শহীদ বুদ্ধিজীবীরা স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি গণতান্ত্রিক উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সমগ্র জাতিকে সঙ্গে নিয়ে তেমনই একটি বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছে। এর মাধ্যমে আমাদের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আমৃত্যু লালিত স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন সম্ভব হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
সকাল নিউজ/এসএফ

