বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দ্বাদশ আসর শুরু হতে যাচ্ছে আগামী ২৬ ডিসেম্বর। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চিরাচরিত ‘প্লেয়ার্স ড্রাফট’ বা লটারির দিন শেষ। ভাগ্যের ওপর নির্ভর না করে এবার মেধা, কৌশল আর অর্থের ঝনঝনানি দিয়ে দল গোছানোর সুযোগ পাচ্ছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো।
দীর্ঘ বিরতির পর বিপিএলের ১২তম আসরে ফিরেছে ‘প্লেয়ার্স অকশন’ বা খেলোয়াড় নিলাম। বিপিএলে নিলাম পরিচালনা করেন রাফে নিজাম। এর আগেও তিনি বিপিএলে কাজ করেছেন।
আজ (৩০ নভেম্বর) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে চলছে জমজমাট খেলোয়াড় নিলাম। দেশি তারকাদের দলে ভেড়াতে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর কাড়াকাড়ির প্রথম পর্ব শেষ হয়েছে। নিলামে আজ স্থানীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে দর কষাকষি শুরু হতেই বড় অঙ্কের বিডিং দেখা যায়।
এই ধাপ শেষে দলগুলোর অবশিষ্ট বাজেটের একটি চিত্র পাওয়া গেছে। নিলামের প্রথম অংশে স্থানীয় ক্রিকেটারদের ‘ডি’ ক্যাটাগরি ছাড়া বাকি সব ক্যাটাগরিরডাক শেষ হয়েছে।
তারকা ক্রিকেটারদের দলে ভেড়াতে গিয়ে বেশ খরচ করতে হয়েছে রংপুর রাইডার্স ও চট্টগ্রাম রয়্যালসকে। অন্যদিকে, বেশ হিসাব কষে এগিয়েছে নোয়াখালী ও সিলেট।
১ কোটি ১০ লাখে নাঈম, লিটনের ঠিকানা রংপুর
প্রথমেই নিলামের টেবিলে ওঠেন জাতীয় দলের ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। তাঁকে দলে নিতে সিলেট টাইটানস, রংপুর রাইডার্স ও নোয়াখালী এক্সপ্রেসের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা সৃষ্টি হয়। এই জমজমাট লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জয়ী হয় চট্টগ্রাম রয়্যালস। তরুণ এই ওপেনারকে রেকর্ড ১ কোটি ১০ লাখ টাকা মূল্যে নিজেদের করে নিয়েছে তারা।
এরপর ‘এ’ ক্যাটাগরির অপর খেলোয়াড় লিটন দাসকে ৭০ লাখ টাকায় দলে টেনেছে রংপুর রাইডার্স।
হৃদয়, শামীম ও সাইফউদ্দিনের চড়া দাম
‘এ’ ক্যাটাগরির পর শুরু হয় ‘বি’ ক্যাটাগরির নিলাম, যেখানে জাতীয় দলের আরও কয়েকজন নিয়মিত সদস্যের নাম ওঠে। এই ক্যাটাগরির খেলোয়াড়দের ভিত্তিমূল্য ৩৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
তরুণ ব্যাটার তাওহিদ হৃদয়কে ৯২ লাখ টাকায় কিনে নিয়েছে রংপুর রাইডার্স। শামীম হোসেনকে ৫৬ লাখ টাকা খরচ করে ঢাকা ক্যাপিটালস তাদের দলে ভিড়িয়েছে। অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিনের জন্য ৬৮ লাখ টাকা ব্যয় করেছে ঢাকা ক্যাপিটালস। অপরদিকে, ওপেনার পারভেজ হোসেনকে তাঁর ভিত্তিমূল্য ৩৫ লাখ টাকায় দলে নিয়েছে সিলেট টাইটানস।
বিশাল ধাক্কা: অবিক্রিত মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিম
নিলামের শুরুতে সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসে যখন ‘বি’ ক্যাটাগরির প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নাম ঘোষণা করা হয়। তাঁর ভিত্তিমূল্য ৩৫ লাখ টাকা থাকা সত্ত্বেও ছয়টি ফ্র্যাঞ্চাইজির কেউই তাঁকে কিনতে আগ্রহ দেখায়নি, ফলে তিনি অবিক্রিত থেকে যান।
একই ভাগ্য বরণ করতে হয় আরেক অভিজ্ঞ তারকা ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমকেও। ৩৫ লাখ টাকা ভিত্তিমূল্য থাকা সত্ত্বেও কোনো দল তাঁকে কেনার জন্য ডাক দেয়নি, ফলে তিনিও অবিক্রিত থেকে যান।
তবে, বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল জানিয়েছে যে পরবর্তীতে অবিক্রিত ক্রিকেটারদের পুনরায় নিলামে তোলার সুযোগ থাকবে। তখন তাঁরা ‘সি’ ক্যাটাগরির খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচিত হবেন।
দলগুলোর হাতে এখনো বড় অঙ্কের বাজেট বাকি রয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রথম পর্ব শেষে দলগুলোর অবশিষ্ট টাকার পরিমাণ:
সিলেট টাইটান্স: ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা
নোয়াখালী এক্সপ্রেস: ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা
রাজশাহী ওয়ারিয়র্স: ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা
ঢাকা ক্যাপিটালস: ১ কোটি ৬২ লাখ টাকা
চট্টগ্রাম রয়্যালস: ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা
রংপুর রাইডার্স: ১ কোটি ৮ লাখ টাকা
এবারের নিলামে চূড়ান্ত তালিকায় মোট ৪১৫ জন ক্রিকেটারের নাম রয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয় ১৫৮ জন এবং বিদেশি ২৫৭ জন। সব মিলিয়ে দলগুলো তাদের স্কোয়াড পূর্ণ করতে অন্তত ৮৪ জন ক্রিকেটারকে বেছে নেবে। দেশি ক্রিকেটারদের পর্ব শেষে এখন বিদেশি এবং বাকি ক্যাটাগরির ক্রিকেটারদের জন্য লড়াই করবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো।
সকাল নিউজ/এসএফ

