রাজধানীর মোহাম্মাদপুরে বাসায় ঢুকে মা-মেয়েকে ছুরিকাঘাত করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই বাসার গৃহকর্মীকে আসামী করে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেছেন নিহত লায়লা আফরোজের স্বামী আ জ ম আজিজুল ইসলাম।
গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের মোহাম্মাদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার জুয়েল রানা। তিনি জানান, জড়িত গৃহকর্মীকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে কাজ চলছে।
আজিজুল ইসলাম মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ‘আমি শাহজাহান রোডের একটি বাসায় থাকি। চারদিন পূর্বে আসামি (আয়েশা) আমার বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। সোমবার সকাল আনুমানিক ৭টার সময় আমি আমার কর্মস্থল উত্তরায় চলে যাই। আমি আমার কর্মস্থলে উপস্থিত থাকা অবস্থায় আমার স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। পরবর্তীতে আমি বেলা ১১টার সময় বাসায় এসে দেখতে পাই, আমার স্ত্রী গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। গলার ডান দিকে কাটা গুরুতর অবস্থায় আমার মেয়ে মেইন গেটের দিকে পড়ে আছে। মেয়েকে উদ্ধার করে পরিছন্নকর্মী মো. আশিকের মাধ্যমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
এজাহারে তিনি আরও উল্লেখ করেন, তার মেয়ের একটি মোবাইল, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী (সঠিক পরিমাণ বলতে পারেননি) খোয়া গেছে।
সোমবার (৮ডিসম্বর) সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বহুতল ভবনের একটি ফ্ল্যাট থেকে মা লায়লা আফরোজ ও মেয়ে লায়লার বিনতে আজিজের (১৫) রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় চার দিন আগে কাজে নেওয়া গৃহকর্মী আয়েশাকে প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে খুঁজছে পুলিশ।
মেডিকেল সূত্রে জানা যায়, লায়লার শরীরে প্রায় ৩০টি, আর তার মেয়ের শরীরে ছয়টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। নাফিসা মোহাম্মদপুরের প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিল। তার বাবা এম জেড আজিজুল ইসলাম উত্তরার সানবিমস স্কুলের পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক।
ভবনের একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আজিজুল ইসলাম সকাল ৭টার দিকে স্কুলের উদ্দেশে বের হয়ে যান। এরপর ৭টা ৫১ মিনিটে বোরকা পরে ওই বাসায় ঢোকে গৃহকর্মী আয়েশা। সকাল ৯টা ৩৬ মিনিটে সে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আজিজুল ইসলাম বাসায় ফিরে স্ত্রী ও মেয়ের রক্তাক্ত নিথর দেহ দেখতে পান।
সকাল নিউজ/এসএফ

