টানা দুই দিন ধরে ‘জেন-জি’র বিক্ষোভ আর সহিংসতার মধ্যে পদত্যাগ করেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। সোশাল মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে কাঠমান্ডুতে যে বিক্ষোভের সূচনা হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত তা প্রধানমন্ত্রীর পতন ঘটায়।
দৃঢ়চেতা অবস্থান ও জাতীয়তাবাদী নীতির জন্য পরিচিত ওলি স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় বসেছিলেন, কিন্তু ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতার মুখে শেষ পর্যন্ত অস্থিরতা এবং কর্তৃত্ববাদী চর্চার অভিযোগ নিয়ে দায়িত্ব ছাড়তে হয়। কিন্তু ক্ষমতা ছাড়ার পর থেকে ওলির অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি দেশে আছেন নাকি বিদেশে চলে গেছেন, তাও স্পষ্ট নয়।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা চারবারের প্রধানমন্ত্রী এবং কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ৭৩ বছর বয়সী কেপি শর্মা ওলির বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে। রাজনৈতিক সমাধানের পথ সুগম করতে ওলি পদত্যাগ করেন, তবে তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ গত দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে সহিংস রূপ ধারণ করে। সরকারি দমন-পীড়নে অন্তত ১৯ জন নিহত হন এবং বিক্ষোভকারীরা সংসদ ভবনে আগুন ধরিয়ে দেন। বিক্ষোভ দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং ক্ষুব্ধ জনতা বিভিন্ন সরকারি ভবন, রাজনীতিবিদদের বাসভবন, সুপারমার্কেটসহ বহু স্থাপনায় আগুন দেয়।
কাঠমান্ডুতে এখনো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যাচ্ছে এবং রাস্তায় পুড়ে যাওয়া গাড়ি ও টায়ারের অবশিষ্টাংশ ছড়িয়ে আছে। সেনাবাহিনী সতর্ক করে বলেছে যে, দেশের স্থিতিশীলতা ও শৃঙ্খলা নষ্ট করতে পারে এমন যেকোনো কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
৩ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার এই হিমালয়কেন্দ্রিক দেশটির হঠাৎ এই সহিংসতা বহু মানুষকে হতবাক করেছে। একজন সেনাসদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আজ শহর অনেকটাই শান্ত, সব জায়গায় সেনা মোতায়েন রয়েছে।’ তথ্যসূত্র- এএফপি।
সকাল নিউজ/এসএফ