অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব দ্য সানশাইন কোস্টের গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু পাখি জেনেটিকভাবে পুরুষ হলেও তাদের দেহে রয়েছে স্ত্রী প্রজনন অঙ্গ। সবচেয়ে বিস্ময়কর হলো- একটি জেনেটিক পুরুষ কুকাবুরা ডিম পেড়েছে। বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে সাময়িকী বায়োলজি লেটারস-এ।
গবেষক ড. ডমিনিক পটভিনের নেতৃত্বে দক্ষিণ-পূর্ব কুইন্সল্যান্ডের ৫ প্রজাতির প্রায় ৫০০ পাখি বিশ্লেষণ করা হয়। আহত বা অসুস্থ হয়ে উদ্ধার হওয়া এসব পাখির মৃত্যুর পর জিনগত ও শারীরিক পরীক্ষা চালানো হয়। এতে দেখা যায়, প্রায় ৬ শতাংশ পাখির জেনেটিক লিঙ্গ ও বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যের অমিল রয়েছে। কেউ জেনেটিক পুরুষ হয়েও ডিম্বাশয়সহ স্ত্রী প্রজনন অঙ্গ বহন করছে, আবার কেউ নারী হয়েও পুরুষের বৈশিষ্ট্য ধারণ করছে।
সবচেয়ে বড় প্রমাণ মেলে এক পুরুষ কুকাবুরার ক্ষেত্রে। তার ওভিডাক্ট ফুলে ছিল এবং ফোলিকল বড় আকার নিয়েছিল- যা সাম্প্রতিক ডিম্বসৃষ্টির স্পষ্ট চিহ্ন। ড. পটভিন জানান, লিঙ্গ পরিবর্তিত পাখিদের ৯২ শতাংশই জেনেটিক নারী হলেও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ছিল পুরুষের মতো।
যদিও সুনির্দিষ্ট কারণ পাওয়া যায়নি, গবেষকদের ধারণা পরিবেশে থাকা হরমোন-বিনষ্টকারী রাসায়নিক, প্লাস্টিক বা কীটনাশক এর জন্য দায়ী হতে পারে। ডিম পাড়া কুকাবুরাটিও পাওয়া গিয়েছিল আধা-নগরায়িত, দূষিত এলাকায়।
এই গবেষণা ইঙ্গিত দেয়, শুধু ডিএনএ, পালক বা আচরণের ভিত্তিতে লিঙ্গ নির্ধারণ করলে প্রায় ৬% ক্ষেত্রে ভুল হতে পারে, যা বিশেষ করে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি সংরক্ষণে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। মাছ, উভচর ও সরীসৃপে লিঙ্গ পরিবর্তনের নজির থাকলেও পাখিদের ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত বিরল। গবেষকদের মতে, পাখির লিঙ্গ নির্ধারণ প্রক্রিয়া আসলে অনেক বেশি জটিল এবং প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও পরিবর্তনশীল হতে পারে।
সকাল নিউজ/এসএফ