এবার শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ভেনেজুয়েলার রাজনীতিবিদ ও মানবাধিকারকর্মী মারিয়া কোরিনা মাচাদো। নরওয়ের রাজধানী অসলোর নোবেল ইনস্টিটিউট থেকে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় এবারের শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করা হয়।
নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউট এবার শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মোট ৩৩৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নাম নিবন্ধন করেছিল। নোবেল প্রাইজের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, এটি জমার শেষদিন ছিল গত ৩১ জানুয়ারি। যাদের মধ্যে ২৪৪ জন ব্যক্তি ও ৯৪টি প্রতিষ্ঠান।
নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির খবরে মারিয়া কোরিনা মাচাদো বলেছেন, পুরস্কার জেতার কথা শুনে তিনি ‘হতবাক’ হয়েছেন। মাচাদোর প্রেস টিম পাঠানো এক ভিডিও’তে শোনা গেছে, মাচাদো টেলিফোনে এডমুন্ডো গনজালেস উরুতিয়ার সঙ্গে এই অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাচাদোকে প্রার্থী হিসেবে বাধা দেওয়া হলে গনজালেস তার জায়গায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নরওয়ের রাজধানী অসলো থেকে এএফপি এ খবর জানায়। প্রায় এক বছর আগে নির্বাসনে যাওয়া গনজালেস জবাবে বলেন, ‘আমরা আনন্দে আত্মহারা’। মাচাদো বলেন, ‘এটা কী! আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না।’
৫৮ বছর বয়সী মাচাদো বর্তমানে ভেনেজুয়েলায় লোকচক্ষুর অন্তরালে বসবাস করছেন। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) নরওয়ের নোবেল কমিটি শান্তিতে নোবেল বিজয়ী হিসেবে মারিয়া কোরিনা মাচাদোর নাম ঘোষণা করে।
কমিটির চেয়ারম্যান ইয়র্গেন ওয়াতনে ফ্রিডনেস অসলোতে এক ঘোষণায় বলেন, ভেনেজুয়েলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তার নিরলস প্রচেষ্টা এবং স্বৈরতন্ত্র থেকে ন্যায়সঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্রে রূপান্তরের সংগ্রামে ভূমিকা রাখায় তাকে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে।
গত বছর শান্তিতে নোবেল পেয়েছে জাপানের পরমাণু অস্ত্রবিরোধী সংগঠন নিহন হিদানকায়ো। নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি বলেছে, পরমাণু অস্ত্রমুক্ত একটি বিশ্ব গড়ার প্রচেষ্টা এবং পরমাণু অস্ত্র আর কখনো ব্যবহার করা যে উচিত নয়, সেটি প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যের মাধ্যমে তুলে ধরার জন্য জাপানের সংগঠনটিকে এই পুরস্কার দেয়া হয়।
রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস ১৯০১ সাল থেকে প্রতিবছর এই পুরস্কার প্রদান করে। সুইডিশ বিজ্ঞানী ও ডিনামাইটের উদ্ভাবক আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুর ৫ বছর পর থেকে তার নামে ও রেখে যাওয়া অর্থে এই পুরস্কার দেয়া হয়। পরে ১৯৬৯ সালে এতে যুক্ত হয় অর্থনীতি।
১৯০১ সালের পর থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ১১১ জন ব্যক্তি ও ৩১টি সংস্থা। পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে ৯২ জন পুরুষ ও ১৯ জন নারী।
এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কম বয়সে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হলেন পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাই। তিনি ২০১৪ সালে ১৭ বছর বয়সে এই পুরস্কার লাভ করেন। আর সবচেয়ে বেশি বয়সে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন ব্রিটিশ-পোলিশ পদার্থবিজ্ঞানী জোসেফ রটব্ল্যাট। পারমাণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৯৫ সালে ৮৬ বছর বয়সে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।
সকাল নিউজ/এসএফ