সঞ্চয়পত্রের অর্থ জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাতের ঘটনায় ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মোহাম্মদ মারুফ এলাহী রনিসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মারুফ এলাহীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার ফরমে পরিচয় শনাক্তকারী মহিউদ্দিন আহমেদকেও আসামি করা হয়েছে। অপর দুই আসামি হলেন– এনআরবিসি ব্যাংকের দিনাজপুর উপশাখার গ্রাহক মো. আরিফুর রহমান মিম এবং তার পরিচয় শনাক্তকারী আল আমিন।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর মতিঝিল থানায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে অতিরিক্ত পরিচালক আবুল খায়ের মো. খালিদ বাদী হয়ে এ মামলা করেন। আসামি আরিফুর রহমান মিমকে মতিঝিল এলাকা থেকে আজ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা একে অপরের সহায়তায় বেআইনিভাবে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে দেওয়া ইউজার আইডিতে গোপনে প্রবেশ করে। জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রাহকের মোবাইল ফোন নম্বর এবং হিসাব নম্বর পরিবর্তন করে তারা অর্থ আত্মসাৎ করেন।
এতে উল্লেখ করা হয়, জালিয়াতির মাধ্যমে মোহাম্মদ মারুফ এলাহী রনির ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখার ব্যাংক হিসাবে দুটি সঞ্চয়পত্রের ৫০ লাখ টাকা নেওয়া হয়। অবশ্য এই অর্থ উত্তোলনের আগেই তা আটকে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর মহাহিসাব নিরীক্ষণ কার্যালয়ের কর্মকর্তা এস এম রেজভীর ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ভাঙিয়ে এনআরবিসি ব্যাংকের দিনাজপুরের রানীগঞ্জ উপশাখার মো. আরিফুর রহমান মিমের অ্যাকাউন্টে নেওয়া হয়। টাকা জমা হওয়ার পরই ঢাকার দুটি শাখা থেকে তা নগদে তুলে নেওয়া হয়।
মতিঝিল থানার অফিসার ইনচার্জ মেজবাহ উদ্দিন জানান, চার আসামির মধ্যে আরিফুর রহমানকে মতিঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পেশায় তিনি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক, সরকারি-বেসরকারি সব বাণিজ্যিক ব্যাংক, সঞ্চয় অধিদপ্তর ও পোস্ট অফিস মিলে প্রায় ১২ হাজার শাখা থেকে সঞ্চয়পত্র কেনা ও ভাঙানো হয়। গত আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকসহ গ্রাহকদের তিন লাখ ৪০ হাজার ৭১ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র আছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশের মতো কেনা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে।
এই অফিসের সঞ্চয়পত্রে জালিয়াতি ধরা পড়ার পর গত মঙ্গলবার থেকে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহক। সুদ কিংবা আসল নগদায়ন করা যাচ্ছে না। নতুন করে সঞ্চয়পত্র বিক্রিও বন্ধ রয়েছে। তবে আগামী রোববার থেকে কাজ শুরু করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গত বুধবার বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট সন্দেহভাজন হিসাবগুলো জব্দ করে। এ ঘটনার পর থেকে সঞ্চয় অধিদপ্তরের এনএসসি সিস্টেমের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। পুরো ঘটনা তদন্তের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএফআইইউ ও এনআরবিসি ব্যাংক থেকে পৃথক তদন্ত কমিটি কাজ করছে।
সকাল নিউজ/এসএফ

