ফিলিস্তিনের গাজাবাসীর জন্য ত্রাণ নিয়ে যাওয়া ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নৌবহরে থাকা ১৩টি নৌযান সাগরে আটকে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এসময় বহরে থাকা ৩৭ দেশের দুই শতাধিক অধিকারকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার মুখপাত্র সাইফ আবুকেশেক ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন। পোস্টে তিনি লিখেছেন, আটকের ঘটনার পরও গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এই বহরে থাকা নৌযানগুলো বাধা উপেক্ষা করে গাজা অভিমুখে ভূমধ্যসাগরে ভেসে চলেছে।
পোস্টে সাইফ আরো লিখেন, তাদের প্রায় ৩০টি নৌযান এখনো দখলদার বাহিনীর সামরিক জাহাজ থেকে দূরে সরে যাওয়ার জন্য লড়াই করছে। গাজার উপকূলে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।
এর আগে গাজা থেকে ১২৯ কিলোমিটার দূরে ভূমধ্যসাগরে থাকা অবস্থায় গতকাল বুধবার রাতে ফ্লোটিলায় বাধা দেয় ইসরায়েলি বাহিনী। এসময় তারা ১৩টি নৌযান থামিয়ে দেয় বলে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে।
গতকাল রাতে এক বার্তায় ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফ্লোটিলার ১৩টি নৌযান আটকের তথ্য
জানিয়েছে। বার্তায় বলা হয়, হামাস-সুমুদ ফ্লোটিলার বেশ কয়েকটি নৌযান থামিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সেসব নৌযানে থাকা যাত্রীদের নিরাপদভাবে নিয়ে আসা হয়েছে ইসরায়েলের বন্দরে।
আটক নৌযানগুলোর মধ্যে ৩টির নাম জানা গেছে। সেগুলো হলো- স্পেক্টার, অ্যালমা এবং সাইরাস।
আর আটকদের মধ্যে আন্তর্জাতিক পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ কয়েকজন রয়েছেন । পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্স বার্তায় এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, গ্রেটা থুনবার্গ এবং তার বন্ধুরা নিরাপদ ও শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার নৌযান আটকের পর উদ্বেগ জানিয়েছেন আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস। এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় তিনি বলেন, গতকাল রাতে যা ঘটল— খুবই উদ্বেগজনক। এটি ছিল একটি শান্তিপূর্ণ মিশন।
এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ জানিয়েছেন, মানবিক কর্মী নিয়ে গাজামুখী সুমুদ ফ্লোটিলায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলাকে পাকিস্তান তীব্র নিন্দা জানায়। তিনি বলেন, এই নৃশংসতা বন্ধ করতে হবে। শান্তিকে সুযোগ দিতে হবে এবং মানবিক সহায়তা অবশ্যই গাজার মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে।
উল্লেখ্য, ফ্রিডম ফ্লোটিলা ফাউন্ডেশন, গ্লেবাল মুভমেন্ট টু গাজা, মাগরেব সুমুদ ফ্লোটিলা এবং সুমুদ নুসানতারা—এই চার আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ঐক্যমঞ্চ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বন্দর থেকে খাদ্য ও ওষুধে পূর্ণ ৪৩টি নৌযানের বহর নিয়ে গাজার উদ্দেশে রওনা দেয় গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। জাহাজগুলোতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে আছেন ৪৪টি দেশের ৫০০ জন নাগরিক। এই নাগরিকদের কেউ পার্লামেন্টারিয়ান, কেউ আইনজীবী, কেউ রাজনৈতিক আন্দোলনকর্মী এবং কেউ বা স্বেচ্ছাসেবী।