তথ্য গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগে গুগলকে ৪২ কোটি ৫০ লাখ বা ৪২৫ মিলিয়ন ডলার জরিমানা করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর ফেডারেল কোর্ট এ রায় দিয়ে জরিমানা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, উবার, ভেনমো, ইনস্টাগ্রামের মতো যেসব অ্যাপ গুগলের বিভিন্ন অ্যানালিটিকস পরিষেবা ব্যবহার করে, সেগুলোর মাধ্যমে সার্চ জায়ান্টটি ব্যবহারকারীর ডাটা সংগ্রহ করেছে। ট্র্যাকিং ফিচার বন্ধ রাখা সত্ত্বেও প্রক্রিয়াটি চালিয়ে নিয়েছে গুগল।
ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগে একটি ফেডারেল জুরি আলফাবেট মালিকানাধীন গুগলকে ৪২ কোটি ৫০ লাখ বা ৪২৫ মিলিয়ন ডলার জরিমানা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর ফেডারেল কোর্টে গত সপ্তাহে দেয়া রায়ে বলা হয়েছে, ‘ওয়েব ও অ্যাপ অ্যাক্টিভিটি’ সেটিংসে ট্র্যাকিং বন্ধ রাখা সত্ত্বেও কয়েক কোটি ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করা অব্যাহত রেখেছে গুগল। খবর রয়টার্স।
মামলার বাদী পক্ষ প্রাথমিকভাবে গুগলের কাছে ৩ হাজার ১০০ কোটি ডলারের বেশি ক্ষতিপূরণ দাবি করেছিল। দীর্ঘ আট বছর ধরে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করার অভিযোগে ক্লাস অ্যাকশনের (একই ধরনের অভিযোগ বা ক্ষতির শিকার হওয়া মানুষদের সম্মিলিত পদক্ষেপ) মামলাটি ২০২০ সালের জুলাইয়ে দায়ের করা হয়েছিল।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, উবার, ভেনমো, ইনস্টাগ্রামের মতো যেসব অ্যাপ গুগলের বিভিন্ন অ্যানালিটিকস পরিষেবা ব্যবহার করে, সেগুলোর মাধ্যমে সার্চ জায়ান্টটি ব্যবহারকারীর ডাটা সংগ্রহ করেছে। ট্র্যাকিং ফিচার বন্ধ রাখা সত্ত্বেও প্রক্রিয়াটি চালিয়ে নিয়েছে প্রযুক্তি কোম্পানিটি।
জুরি বোর্ড তিনটি অভিযোগের মধ্যে দুটি ক্ষেত্রে গুগলকে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের জন্য দায়ী উল্লেখ করে রায় দেন। তবে বোর্ড এ সিদ্ধান্তেও পৌঁছায় যে গুগলের কার্যক্রম বিদ্বেষমূলক না হওয়ায় দৃষ্টান্তমূলক ক্ষতিপূরণ (পিউনিটিভ ড্যামেজেস) দেয়া হয়নি।
গুগলের মুখপাত্র হোসে কাস্টানেডা জানিয়েছেন, রায়টির বিরুদ্ধে আপিল করার পরিকল্পনা চলছে। পরিষেবার কার্যকারিতা সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমনটা হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি জানান, প্রতিষ্ঠানের গোপনীয়তা টুলগুলো ব্যবহারকারীদের ডাটার ওপর নিয়ন্ত্রণ দেয় এবং যখন তারা পার্সোনালাইজড ফিচার বন্ধ করে, তখন সেই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানানানো হয়।
অন্যদিকে, ব্যবহারকারীদের পক্ষের আইনজীবী ডেভিড বয়েস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা জুরি বোর্ডের দেয়া রায়ে সন্তুষ্ট হয়েছি।’
ক্লাস অ্যাকশন মামলাটিতে প্রায় ৯ কোটি ৮০ লাখ গুগল ব্যবহারকারী ও ১৭ কোটি ৪০ লাখ ডিভাইসের উল্লেখ করা হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি গুগলের জন্য একটি বড় আইনি ধাক্কা, যার কারণে কোম্পানিটির ডাটা ব্যবস্থাপনার বিষয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে।
উল্লেখ্য, গোপনীয়তা লঙ্ঘনের জন্য এর আগেও গুগলকে বিভিন্ন মামলার মুখোমুখি হতে হয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে টেক্সাস রাজ্যের গোপনীয়তা আইন ভাঙার অভিযোগে করা একটি মামলার মীমাংসা করতে কোম্পানিটিকে প্রায় ১৪০ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে।
সকাল নিউজ/এসএফ