নির্বাচনী মাঠে নতুন রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে তারেক রহমানের নেতৃত্বাধীন ‘আমজনতার দল’। একই সঙ্গে ইসি নিবন্ধন দিতে যাচ্ছে ‘জনতার দল’-কেও, নিশ্চিত করেছে নির্বাচন কমিশন।
পুনঃতদন্তের পর এই দুইটি দলকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবনে আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি এ কথা জানান। এসময় তফসিলের বিষয়ে আলোচনা করার জন্য আগামী ১০ কিংবা ১১ তারিখ রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সাক্ষাৎ চেয়ে নির্বাচন কমিশন চিঠি দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
দল নিবন্ধনের বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘পুনরায় কয়েকটি দলের কার্যক্রম তদন্ত করা হয়। পুনঃতদন্তে নতুন দুটি দল আমজনতার দল ও জনতার দল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কার্যালয়ের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে। দল দুটি নিবন্ধন পাওয়ার শর্তপূরণ করায় কমিশন নিবন্ধন দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দল দুটির বিষয়ে কারো আপত্তি রয়েছে কি না তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আগামী ৯ ডিসেম্বর সময় দিয়ে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। আগামীকাল (শুক্রবার) পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।’
রাষ্ট্রপতির সাক্ষাতের বিষয় তুলে ধরে ইসি সচিব বলেন, ‘তফসিল ও গণভোট নিয়ে আলোচনা করতে ১০ অথবা ১১ ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ চেয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আজ দুপুরে বঙ্গভবন বরাবর এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।’
প্রবাসী ভোটের বিষয় আখতার আহমেদ বলেন, ‘প্রবাসীরা যে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেবে সেই ব্যালটের কোন কোন ব্যালট বাদ যাবে এবং কী পদ্ধতিতে গণনা করা হবে সে বিষয় একটা সংশোধনী ছিল। আজ উপদেষ্টা পরিষদ সেই সংশোধনী অনুমোদন করেছে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘প্রজাপতি প্রতীকে আমরা নিবন্ধন পাবো। ইসি বলেছে আমরা নিবন্ধন পাওয়ার জন্য সব শর্ত পূরণ করেছি। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর গেজেট হবে।’
নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্টরা জানান, নিবন্ধন না পাওয়ায় আমজনতার দলের সদস্যসচিব তারেক রহমান নির্বাচন ভবন সংলগ্ন এলাকায় যে আমরণ অনশন শুরু করেছিলেন তা শেষ পর্যন্ত ইসির ইতিবাচক সিদ্ধান্তে আলোর মুখ দেখছে।
প্রসঙ্গত, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বেশ কয়েকটি নতুন দল নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছিল। তবে প্রাথমিক যাচাই-বাছাই ও মাঠের তথ্যের ভিত্তিতে ইসি মাত্র কয়েকটি দলকে নিবন্ধনের জন্য চূড়ান্ত করে। এই তালিকায় ‘আমজনতার দল’ ও ‘জনতার দল’এর নাম ছিল না।
তখন দলটির সদস্য সচিব তারেক রহমান অভিযোগ করেন, তাদের দলের সব শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও রাজনৈতিক বিবেচনায় নিবন্ধন দেওয়া হয়নি। ইসির এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গত ৪ নভেম্বর থেকে তিনি নির্বাচন ভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষা আর নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সামনে টানা ১২৫ ঘণ্টা অনশন চালিয়ে যান।
একই সময়ে ‘জনতার দল’ও নিবন্ধনের দাবিতে ইসির কাছে তাদের চূড়ান্ত আবেদন পুনর্বিবেচনার দাবি জানায়। অনশন চলাকালীন তারেক রহমানের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে ইসিকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
ব্যাপক চাপের মুখে ইসি তারেক রহমানকে অনশন ভেঙে আপিলের পরামর্শ দেয়। তবে পরে ইসি এক জরুরি বৈঠকে কয়েকটি দলের আবেদন পুনর্বিবেচনা করা হয়। পুনর্বিবেচনার পরিপ্রেক্ষিতেই এই দুটি দল নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে ইসির।
সকাল নিউজ/এসএফ

