বাংলাদেশে অনলাইন নিরাপত্তা, ডিজিটাল আচরণবিধি বাস্তবায়ন এবং ক্ষতিকর অনলাইন কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগ জোরদারে রাজধানীতে আজ গুরুত্বপূর্ণ এক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) ও টেরে দেস হোমস নেদারল্যান্ডস-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ সংলাপে অংশ নেয় ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন (ISPAB), বিটিআরসি, গণমাধ্যম এবং বিভিন্ন অংশীজন।
সংলাপে শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা, সাইবার স্পেসে নৈতিক আচরণ, কনটেন্ট মনিটরিং, অভিভাবকের ভূমিকা এবং সমন্বিত ডিজিটাল নীতি বাস্তবায়ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিষদ সদস্য তাহমিনা রহমান।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)-র মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম মনিরুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘কোনো ওয়েব লিংক বা ওয়েবসাইট আইডেন্টিফাই করার এখতিয়ার বিটিআরসির নেই। প্রাপ্ত অভিযোগ বা তালিকা পেলে বিটিআরসি প্রযুক্তিগতভাবে তা নিষ্ক্রিয় করতে পারে, কিন্তু উৎস শনাক্ত বা কনটেন্টের মূল উৎপত্তি নির্ধারণ করা কমিশনের দায়িত্বের আওতায় পড়ে না।
তিনি আরও বলেন, ‘শিশু সুরক্ষা এবং অনলাইন ক্ষতিকর কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে বহু সংস্থার সমন্বিত কাজের প্রয়োজন, কারণ শুধু প্রযুক্তিগত সক্ষমতার মাধ্যমে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।’
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা শুধু প্রযুক্তির বিষয় নয়; এটি পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, নীতিনির্ধারক এবং প্রযুক্তি খাত সহ সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।’
সংলাপে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উইম্যান সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশনের ডেপুটি কমিশনার ফারহানা ইয়াসমিন।
তিনি বলেন, ‘নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে অনলাইনে প্রতিনিয়ত নতুন ধরনের অপরাধ ঘটছে। অনেকেই ঘটনাগুলো প্রকাশ করতে ভয় পান।’ নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে অভিভাবক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে একসাথে কাজ করার জন্য তিনি আহ্বান জানান।
আয়োজক সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) প্রতিনিধিরা বলেন, ‘অনলাইনে শিশু সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনি সহায়তা, মনিটরিং, সচেতনতা এবং নীতিমালার সমন্বিত প্রয়োগ অপরিহার্য।’
বাস্তবায়নের জন্য ক্রমানুসারে তারা নিন্মোক্ত সুপারিশমালা উল্লেখ করেন-
১. অনলাইন নিরাপত্তা ও নৈতিক আচরণবিধি বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ের সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়ন।
২. শিশুদের উপযোগী কনটেন্ট নিশ্চিত করতে ISP ও প্ল্যাটফর্মগুলোর আরও সক্রিয় ভূমিকা।
৩. অভিভাবক, শিক্ষক, কনটেন্ট নির্মাতা ও মিডিয়ার জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ।
৪. বিষয়বস্তুর অপব্যবহার ও সাইবার সহিংসতা প্রতিরোধে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি।
৫. সংশ্লিষ্ট সংস্থার মধ্যে দ্রুত তথ্য আদান–প্রদান ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
সকাল নিউজ/এফএফ

